তাইফা
তাইফা (আরবি: طائفة ṭā'ifa থেকে, বহুবচন طوائف ṭawā'if) দ্বারা মুসলিম শাসিত স্পেনের স্বাধীন রাজ্যসমূহ বোঝানো হয়। এগুলো ছিল বিভিন্ন ছোট রাজ্য। ১০৩১ সালে কর্ডোবার উমাইয়া খিলাফতের পতনের পর এসব রাজ্যের উদ্ভব হয়।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]উত্থান
[সম্পাদনা]১১শ শতাব্দীতে প্রথম ক্রুসেড শুরু হওয়ার পর জেরুজালেম অঞ্চল খ্রিষ্টানদের হস্তগত হয়। এসময় ইবেরিয়ান উপদ্বীপের উত্তরের খ্রিষ্টানরা মুসলিম অঞ্চল দখল শুরু করে। কর্ডোবা খিলাফত ইউরোপের সবচেয়ে ধনী ও শক্তিশালী রাষ্ট্র হলেও তাতে গৃহযুদ্ধ দেখা দেয় যা ফিতনা বলে পরিচিত। ফলাফল হিসেবে খিলাফত ভেঙে গিয়ে তাইফা নামক শত্রুভাবাপন্ন বিভিন্ন ক্ষুদ্র আমিরাত সৃষ্টি হয়।[১]
তবে এই রাজনৈতিক বিভক্তির ফলে সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে অবনতি ঘটেনি। বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মকাণ্ড এসব তাইফায় চালু ছিল।
১১শ ও মধ্য ১২শ শতাব্দীতে তাইফার সমৃদ্ধির সময় আমিরদের মধ্যে প্রতিযোগিতা দেখা দেয়। এতে সামরিক ছাড়া সাংস্কৃতিক কারণও ছিল। বিখ্যাত কবি ও কারিগরদেরকে তারা নিজস্ব কাজে নিয়োজিত করতে সচেষ্ট ছিলেন।
অবনতি
[সম্পাদনা]খিলাফতের শক্তিশালী অবস্থায় উত্তরের খ্রিষ্টান রাজ্যগুলো খলিফাকে কর প্রদান করত। খিলাফতের ভাঙনের পর উদ্ভূত ক্ষুদ্র রাজ্যগুলো তাদের খ্রিষ্টান প্রতিপক্ষের তুলনায় দুর্বল হয়ে পড়ে।
সামরিক দুর্বলতার কারণে খ্রিষ্টানদের সাথে লড়াইয়ের জন্য তাইফার শাসকরা উত্তর আফ্রিকান যোদ্ধাদেরকে দুইবার আমন্ত্রণ জানান। ১০৮৫ সালে টলেটোর পতনের পর আলমোরাভিদের এবং ১১৪৭ সালে লিসবনের পতনের পর আলমোহাদদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তাদের যোদ্ধারা তাইফা আমিরদের সাহায্য করা ছাড়াও তাদের ভূখন্ডগুলো উত্তর আফ্রিকান সাম্রাজ্যের অংশ করে নেয়।
পার্শ্ববর্তী খ্রিষ্টান ও মুসলিম প্রতিবেশী রাজ্যের সাথে লড়াইয়ের জন্য তাইফাগুলো খ্রিষ্টান ভাড়াটে সৈনিকদের নিয়োগ করত। সেভিল ছিল আলমোরাভি আক্রমণের পূর্বে সবচেয়ে গতিশীল তাইফা। জারাগোজাও খুব শক্তিশালী ও ধনী তাইফা ছিল। জারাগোজা, টলেডো ও বাডাজোজ ছিল প্রাক্তন খিলাফতের সীমান্তবর্তী সামরিক জেলা।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Tolan, John (২০১৩)। Europe and the Islamic World: A History। Princeton: Princeton University press। পৃষ্ঠা 40, 39-40।