বিষয়বস্তুতে চলুন

আরাধনা (১৯৬৯-এর চলচ্চিত্র)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আরাধনা
পরিচালকশক্তি সামন্ত
প্রযোজকশক্তি সামন্ত
রচয়িতাশচীন ভৌমিক
শ্রেষ্ঠাংশেশর্মিলা ঠাকুর
রাজেশ খান্না
সুজিত কুমার
ফরিদা জালাল
সুরকারশচীন দেববর্মণ
রাহুল দেব বর্মণ (সাউন্ড রেকোর্ডিস্ট এবং সহকারী সুরকার)
কিশোর কুমার ('রূপ তেরা মাস্তানা' গান)
চিত্রগ্রাহকঅলোক দাসগুপ্ত
সম্পাদকসহিল বুধিরাজা
পরিবেশকশক্তি ফিল্মস্
মুক্তি৭ নভেম্বর, ১৯৬৯
স্থিতিকাল১৬৯ মিনিট
দেশভারত
ভাষাহিন্দি
বাংলা
আয়প্রায় ₹ ১৭.৮৫ কোটি টাকা

আরাধনা (হিন্দি: आराधना) হচ্ছে ১৯৬৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত শক্তি সামন্তের পরিচালনায় একটি চলচ্চিত্র। এতে ভারতীয় চলচ্চিত্র জগৎ তথা বলিউডের অন্যতম ব্যক্তিত্ব রাজেশ খান্না'র বিপরীতে নায়িকার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন বাঙালি অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুর। চলচ্চিত্রটি ১৯৪৬ সালের হলিউড চলচ্চিত্র 'টু ইচ হিস ওৌন' থেকে অনুপ্রাণিত। বছরের সেরা চলচ্চিত্র হিসেবে আরাধনা ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করে। শর্মিলা ঠাকুরও ফিল্মফেয়ার সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার লাভ করেন যা হলিউড চলচ্চিত্রে একই ধরনের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে অলিভিয়া দ্য হ্যাভিল্যান্ড তার সেরা অভিনেত্রী হিসেবে একাডেমি পুরস্কার লাভ করেছিলেন।[]

চলচ্চিত্রটি মূলত হিন্দি ভাষার হলেও এটি গানসহ বাংলা ভাষায় ডাবিং করে একই সঙ্গে মুক্তি দেওয়া হয়েছিলো। আরাধনা চলচ্চিত্রের ব্যাপক ব্যবসায়িক সাফল্যে আরো দু'টি ভাষা - তামিলতেলুগু ভাষায় যথাক্রমে শিবগামিইন সেলভান (১৯৭৪) ও কন্যাবাড়ি কালালু (১৯৭৪) নামে পুনরায় নির্মিত হয় যাতে শর্মিলা ঠাকুরের চরিত্রে তামিল-তেলুগু চলচ্চিত্র অভিনেত্রী বানিশ্রী অভিনয় করেছিলেন।[]

কাহিনী

[সম্পাদনা]

ভারতীয় বিমান বাহিনীর বৈমানিক ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট অরুণ বর্মা একটি জীপে একটি নারীকে উদ্দেশ্য করে গান গাচ্ছেন, ফ্লাঃ লেঃ অরুণের সঙ্গে তার সহকর্মী বৈমানিক ফ্লাঃ লেঃ মদন বর্মা রয়েছেন, যাকে উদ্দেশ্য করে গান গাচ্ছিলেন অরুণ তিনি ডক্টর গোপাল ত্রিপাঠীর মেয়ে বন্দনা। সংক্ষিপ্ত প্রেমের পর অরুণ বন্দনার সঙ্গে দৈহিক মিলন করেন।

বিমান বাহিনীর একটি অনুশীলনে ফ্লাঃ লেঃ অরুণ আহত হয়ে হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন এবং আগেই বন্দনা গর্ভবতী হয়ে পড়েছিলেন অরুণের বীর্যের দ্বারা। অরুণের অভিভাবক বন্দনাকে গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানায় কারণ তাদের বিয়ে হয়েছে এরকম কোনো প্রমাণ নেই। হঠাৎ বন্দনার বাবা মারা যায়। বন্দনার একটা ছেলের জন্ম হয় এবং সন্তানহীন এক দম্পতি ঐ ছেলেটাকে দত্তক নেয়। ঐ ছেলেটার জীবনের অংশ হওয়ার জন্য বন্দনা উক্ত পরিবারে বাচ্চাদেখভালকারীর কর্মচারী হিসেবে যোগ দেয়। ছেলেটার নাম সূর্য রাখা হয়। উক্ত পরিবারের কর্ত্রীর ভাই শ্যাম বন্দনার উপর যৌননজর দেয়। একদা শ্যাম বন্দনাকে বলাৎকার করার চেষ্টা করলে সূর্য তাকে খুন করে ফেলে, পুলিশের কাছে বন্দনা নিজেকে অপরাধী সাজায় সূর্যকে বাঁচানোর জন্য। বন্দনার জেল হয়।

অনেক বছর পর বন্দনা জেল থেকে ছাড়া পায় এবং তার জেলার তাকে পছন্দ করায় তাকে তার বাসায় নিয়ে যায় এবং তার মেয়ে রেণুর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। বন্দনা ফ্লাঃ লেঃ অরুণের মত দেখতে সূর্যের সামনাসামনি পড়ে যায় যেও একজন বিমান বাহিনীর বৈমানিক (ফ্লাঃ লেঃ), সূর্য হচ্ছে রেণুর প্রেমিক। সূর্য তাকে দেখে মনে মনে ভাবে যে ওনাকে কোথায় যেন দেখেছে সে তবে বন্দনা তার পরিচয় তাকে দেয়না।

সূর্য বিমান দুর্ঘটনায় পড়ে এবং হাসপাতালে ভর্তি হয়, ওখানে ফ্লাঃ লেঃ অরুণের বন্ধু এখন এয়ার কমোডোর মদন বন্দনার সঙ্গে কথা বলে, সে বন্দনাকে বলে যে সূর্যকে তার পরিচয় বলে দিতে, কিন্তু বন্দনা মানা করে, সূর্য পরে একসময় রেণুর বাসায় ফ্লাঃ লেঃ অরুণ এবং বন্দনার ছবি দেখে ফেলে এবং বুঝতে পারে যে বন্দনা তার মাতা। পরে একটি অনুষ্ঠানে বন্দনাকে সম্মানিত করে ফ্লাঃ লেঃ সূর্য।

শ্রেষ্ঠাংশে

[সম্পাদনা]

সঙ্গীত

[সম্পাদনা]
আরাধনা
কর্তৃক সঙ্গীত আরাধনা
মুক্তির তারিখ১৯৬৯
ঘরানাচলচ্চিত্র সঙ্গীত
ভাষাহিন্দি
বাংলা
সঙ্গীত প্রকাশনীইএমআই রেকর্ডস

আরাধনা চলচ্চিত্রে সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন শচীন দেববর্মণ এবং গীতিকার ছিলেন আনন্দ বক্সী। চলচ্চিত্রটির জন্য শচীন দেববর্মণ ইতোমধ্যেই গান রেকর্ড করা শুরু করেন। এতে কণ্ঠশিল্পী হিসেবে মোহাম্মদ রফিকে অন্তর্ভুক্ত করেন ও দু'টি গান রেকর্ড করা হয়। কিন্তু শচীন খুবই অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে হাসপাতালে স্থানান্তরিত করতে হয়। ফলে সাউন্ডট্র্যাকের দায়িত্ব এসে পড়ে তারই সন্তান রাহুল দেব বর্মণের উপর। তিনি কিশোর কুমারকে দিয়ে রুপ তেরা মাস্তানা এবং মেরে স্বপ্নো কি রাণী শিরোনামে অত্যন্ত জনপ্রিয় দু'টি গান রেকর্ড করান। ফলশ্রুতিতে কিশোর কুমার রুপ তেরা মাস্তানা গানের জন্যে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করেছিলেন।[]

ক্রমিক নং গানের শিরোনাম গায়ক মন্তব্য
"রুপ তেরা মাস্তানা" কিশোর কুমার ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ
"বাঘো ম্যায় বাহার হ্যায়" মোহাম্মদ রফি, লতা মঙ্গেশকর
"চান্দা হ্যায় তু মেরা সুরজ হ্যায় তু" লতা মঙ্গেশকর
"মেরে স্বপ্নো কি রাণী" কিশোর কুমার
"গুন গুনা রাহে হ্যায় ভ্রমর" মোহাম্মদ রফি, আশা ভোঁসলে
"কোরা কাগজ থা ইয়ে মন মেরা" কিশোর কুমার, লতা মঙ্গেশকর
"সফল হোগি তেরি আরাধনা" এস, ডি, বর্মণ
বাংলা গানের তালিকা
নং.শিরোনামকণ্ঠশিল্পীদৈর্ঘ্য
১."এত কাছে দুজনে"কিশোর কুমার 
২."মাধবী ফুটেছে ঐ"রাহুল দেব বর্মণ, লতা মঙ্গেশকর 
৩."চন্দ্র যে তুই"লতা মঙ্গেশকর 
৪."মোর স্বপ্নের সাথী"কিশোর কুমার 
৫."গুঞ্জনে দোলে যে ভ্রমর"কিশোর কুমার, আশা ভোঁসলে 
৬."আজ হৃদয়ে ভালোবেসে"কিশোর কুমার, লতা মঙ্গেশকর 

পুরস্কার

[সম্পাদনা]

চলচ্চিত্রের কাহিনী, চিত্রনাট্য, সংলাপ, অভিনয়শৈলী, সঙ্গীতে আরাধনা চলচ্চিত্রটি ১৯৬৯ সালে নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করে:[]

অন‍্যদিকে, শচীন দেববর্মণ ১৯৬৯ সালে সফল হোগী তেরি আরাধনা গানটির জন‍্য শ্রেষ্ঠ নেপথ‍্য পুরুষ কণ্ঠশিল্পী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (ভারত) লাভ করেন।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "rediff.com: Dial D for Darjeeling"। Specials.rediff.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০১-১৪ 
  2. The Sunday Times On The Web - Mirror Magazine
  3. http://www.yoodleeyoo.com/kishore-diary/kishore-s-d-burman-a-relationship-that-began-with-aradhana.html
  4. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"The Times Of India। ৯ জুলাই ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জুলাই ২০১২ 

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]
pFad - Phonifier reborn

Pfad - The Proxy pFad of © 2024 Garber Painting. All rights reserved.

Note: This service is not intended for secure transactions such as banking, social media, email, or purchasing. Use at your own risk. We assume no liability whatsoever for broken pages.


Alternative Proxies:

Alternative Proxy

pFad Proxy

pFad v3 Proxy

pFad v4 Proxy